৭ম শ্রেণীর ৪র্থ সাপ্তাহের বিজ্ঞান বিষয়ের এস্যাইনমেন্ট এর সমাধান


৭ম শ্রেণীর ৪র্থ সাপ্তাহের বিজ্ঞান বিষয়ের এস্যাইনমেন্ট এর  সমাধান 



প্রশ্ন ১: লিথিয়াম, পানি, খাবার লবন, চক, কার্বন, চুন, নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম, অক্সিজেন, আয়ােডাইড, লােহা, ক্লোরিন ইত্যাদি কিছু পদার্থ।


ক) মৌলিক পদার্থ কাকে বলে?

খ) অণু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য লিখ।

গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত পদার্থগুলােকে প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে প্রকাশ করে মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ আলাদা কর।

ঘ) উল্লেখিত পদার্থগুলাের মধ্যে কাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়? কারণ বিশ্লেষণ কর।


সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ১ : চিনিকে কেন যৌগিক পদার্থ বলা হয়?


(ক) মৌলিক পদার্থ কাকে বলে?

(ক) নং উত্তর 

যেসব পদার্থ একটিমাত্র উপাদান দিয়ে তৈরি তাদেরকে মৌলিক পদার্থ বলে। যেমন: তামা, লোহা,‌ হাইড্রোজেন ,অক্সিজেন ইত্যাদি। আপনি এই সকল পদার্থ কে ভাংলে আর নতুন কোন পদার্থ পাওয়া যাবেনা।


যে পদার্থকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করলে ওই পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তা-ই মৌলিক পদার্থ।

যেমন : হাইড্রোজেন (H2), সোডিয়াম (Na)।


(খ) অণু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য লিখ।

(খ) নং উত্তর :


অণু

  • অণু মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা।
  • অণু স্বাধীনভাবে মুক্ত অবস্থায় থাকতে পারে।
  • অণু সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণের পূর্বে অণু পরমাণুতে বিশ্লিষ্ট হয়।
  • পৃথিবীতে যৌগিক পদার্থের সংখ্যা অসংখ্য বলে অণুর সংখ্যাও অসংখ্য।
  • অণুকে ভাঙলে একই বা ভিন্ন মৌলের পরমাণু পাওয়া যায়।

পরমাণু

  1. পরমাণু মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা।
  2. সাধারণত পরমাণু স্বাধীনভাবে মুক্ত অবস্থায় থাকতে পারে না, তবে কোনো কোনো মৌলিক পদার্থের পরমাণু স্বাধীনভাবে থাকতে পারে। যেমন—হিলিয়াম, নিয়ন, আর্গন ইত্যাদি।
  3. পরমাণু সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
  4. বিভিন্ন প্রকার পরমাণুর সংখ্যা সীমিত। এ পর্যন্ত ১১১ প্রকারের পরমাণু আবিষ্কৃত হয়েছে।
  5. পরমাণুকে ভাঙলে ওই মৌলের আর অস্তিত্ব থাকে না।

অণু ও পরমাণুর মধ্যে পার্থক্য


অনু:- মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা, যার মধ্যে ঐ পদার্থের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে তাই অণু।

পরমাণু :- মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা হল পরমাণু।

অনু:- অণুর স্বাধীন সত্তা আছে।

পরমাণু :- পরমাণুর স্বাধীন সত্তা নেই।

অনু :- অণু রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। 

পরমাণু :- পরমাণু সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

অনু:- অণুতে মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের ধর্ম বিদ্যমান থাকে।

পরমাণু :- পরমাণুতে মৌলিক পদার্থের ধর্ম বিদ্যমান থাকে।

অনু:- অণুর উপাদান অসীম।

পরমাণু :- পরমাণুর উপাদান ১১৪ টি।



উদ্দীপকে উল্লেখিত পদার্থগুলােকে প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে প্রকাশ করে মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ আলাদা কর।

(গ) নং উত্তর :- 

মৌলিক পদার্থসমূহ
পদার্থের নাম      প্রতীক।      সংকেত
লিথিয়াম             Li.    
কার্বন।                 C
নাইট্রোজেন.        N.             N2
অক্সিজেন.           O.             O2
লোহা                    Fe
ক্লোরিন                 C.            C2
পটাশিয়াম।         K
আয়োডাইড.        I

যৌগিক পদার্থসমূহ
পদার্থের নাম         সংকেত
পানি                      H2O
খাবার লবণ.          NaCI
চক.                      CaCO3
চুন.                       CaO



উল্লেখিত পদার্থগুলাের মধ্যে কাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়? কারণ বিশ্লেষণ কর।

(ঘ) নং উত্তর :- 


পানিকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়।

যেসব পদার্থ অন্য পদার্থকে দ্রবীভূত করতে পারে তাদেরকে দ্রাবক বলে। আর কোনো পদার্থ যদি অজৈব ও জৈব সকল প্রকৃতির পদার্থকে দ্রবীভূত করে, তাকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়। পানি একটি অজৈব যৌগ। পানিতে ধনাত্মক-ঋণাত্মক প্রান্ত অর্থাৎ পোলারিটি রয়েছে। পোলারিটি থাকার কারণে এটি অন্য পোলার যৌগ সমূহকে দ্রবীভূত করতে পারে। ফলে বেশিরভাগ অজৈব যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয়। তাছাড়া যেসব জৈব যৌগে পোলারিটি রয়েছে এরাও সহজে পানিতে দ্রবীভূত হয়। পানি জৈব ও অজৈব উভয় ধরনের যৌগকে দ্রবীভূত করে বলে একে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়।

সাধারণত যেসকল পদার্থ অন্য পদার্থকে দ্রবীভূত করতে পারে তাদেরকে দ্রাবক বলে।

পানি একটি পোলার অণু। অর্থাৎ পানির একপ্রান্তে থাকে পজিটিভ চার্জ এবং অন্যপ্রান্তে থাকে নেগেটিভ চার্জ।

যেমনঃ পানির সংকেত H2O ; H+ হচ্ছে পজিটিভ প্রান্ত এবং OH– হচ্ছে নেগেটিভ প্রান্ত

ফলে যেকোনো পদার্থের পজিটিভ প্রান্তের সাথে পানির নেগেটিভ (OH–) এবং পদার্থের নেগেটিভ প্রান্তের সাথে পানির পজিটিভ প্রান্ত (H+) মিলে যৌগ গঠন করে। অর্থাৎ, তখন যৌগটি পানিতে দ্রবীভূত হয়।

পানির এই পোলারিটির কারণে অধিকাংশ অজৈব যৌগ-ই পানিতে দ্রবীভূত হয়। তাছাড়া, যেসকল জৈব যৌগে পোলারিটি রয়েছে তারাও পানিতে দ্রবীভূত হয়।

অর্থাৎ, পানি জৈব ও অজৈব অধিকাংশ যৌগকেই দ্রবীভূত করতে পারে।

এজন্যই পানিকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ১ : চিনিকে কেন যৌগিক পদার্থ বলা হয়?

উত্তর :- চিনি সাধারণত একটি যৌগিক পদার্থ। কারণ যেসব পদার্থ একের অধিক ভিন্নধর্মী উপাদান বিশিষ্ট মৌলিক পদার্থ দিয়ে তৈরি তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলা হয়। চিনি কে ভাঙলে হাইড্রোজেন অক্সিজেন ও কার্বন বিভিন্ন ধরনের পদার্থ পাওয়া যায়। অতএব আমরা বুঝতে পারছি যে চিনি একটি যৌগিক পদার্থ।

পরিশেষে আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি যে তিনি একটি যৌগিক পদার্থ। কারণ চিনির মধ্যে যৌগিক পদার্থের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *