HSC 2021 Business Organization and Management Assignment Answer | ২০২১ সালের এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা সমাধান

২০২১ সালের এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা সমাধান (১ম পত্র)

*** উদাহরণসহ ব্যবসায়ের ধারণা

সাধারণত মুনাফার উদ্দেশ্যে পরিচালিত, নিয়ন্ত্রিত সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে ব্যবসায় বলে। গত কয়েকদিন আগে আমি মাঠে খেলতে গিয়ে কয়েকজন বন্ধুদের কাছ থেকে জিঞ্জেস করলাম যে.তাদের কার বাবা কি করে । অনেকেই বলল ঐষধের দোকান, মুদির দোকান, শাড়ির দোকান, কসমেটিকস এর দোকান ইত্যাদি পেশায় নিয়োজিত থাকে । তাদের অভিভাবকদের সবগুলো অর্থনৈতিক কাজ ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত হবে যদি তারা জীবিকা নির্বাহ ও মুনাফার আশায় উক্ত কাজগুলো করে থাকেন । মূলত মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে ব্যবসায় বলে।

পরিবারের সদস্যদের জন্য খাদ্য উৎপাদন করা হাস- মুরগি পালন করা , সবজি চাষ করাকে ব্যবসায় বলা যায় না। কিন্তু ষখন কোনো কৃষক মুনাফার আশায় ধান চাষ করে বা সবজি চাষ করাকে ব্যবসায় বলে গণ্য হবে । তবে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যবসা বলে গণ্য হবে যদি সেগুলো দেশের আইনে বৈধ ও সঠিক উপায়ে পরিচালিত হয়। ব্যবসায়ের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা একে অন্য সব পেশা থেকে আলাদা করেছে। ব্যবসায়ের সাথে জড়িত পণ্য বা সেবার অবশ্যই আর্থিক মূল থাকতে হবে। ব্যবসায়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এর সাথে ঝুঁকির সম্পর্ক । মূলত মুনাফা অর্জনের আশাতেই ব্যবসায়ী অর্থবিনিয়োগ করে । ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডর মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি অবশ্যই সেবার পরিচালিত হয় । ব্যবসায়ের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা একে অন্য সব পেশা থেকে আলাদা করেছে। ব্যবসায়ের সাথে জড়িত পণ্য বা সেবার অবশ্যই আর্থিক মুল্য থাকতে হবে। ব্যবসায়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এর সাথে ঝুঁকির সম্পর্ক । মুলত মুনাফা অর্জনের আশাতেই ব্যবসায়ী অর্থ বিনিয়োগ করে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডর মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি অবশ্যই সেবার মনোভাব থাকতে হবে।

ব্যবসায়ের আওতা বলতে ব্যবসায়ের স্বাভাবিক কার্ষক্ষেত্র বা কাজের গন্ডিকেই বোঝায় । ব্যবসায়ের আওতা বা পরিধি অত্যান্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত । মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে মানুষের বন্তগত ও অবস্তগত অভাব মিটানোর জন্য পণ্য-দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন, সংগ্রহ ও বন্টন এবং এদের সহায়ক যাবতীয় কার্যাবলী আধুনিক ব্যবসায়ের আওতাভুক্ত । মুল্যের বিনিময়ে । ভোক্তাকে সেবা পরিবেশনও আধুনিক ব্যবসায়ের আওতাভুক্ত। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ শিল্পের মাধ্যমে ,সংগ্রহ ও বন্টন সংক্রান্ত কাজ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। বন্টনের ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় বা পণ্য বিনিময় মুখ্য কাজ হিসেবে গণ্য। অন্যান্য কাজ পণ্য বিনিময়ের সহায়ক কার্যাবলী হিসেবে বিবেচিত হয়।

এই আলোকে ব্যবসায়ের আওতাকে নিননলিখিত ৪ টি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়

১. শিল্প

২. বাণিজ্য

৩.শিল্প ও বাণিজ্যের সহায়ক কাজ ও

৪ প্রত্যক্ষ সেবা।


১. শিল্প: শিল্পের কাজ হলো প্রকৃতি হতে প্রাপ্ত সম্পদসমূহ উত্তোলন, শোধন ও প্রস্ততকরণ। শিল্পজাত সেবাও শিল্পের আওতাভুক্ত । এছাড়া পণ্যের রূপগত পরিবর্তন সাধন করে নুতন নতুন উপযোগ সৃষ্টি করাও শিল্সের কাজ।

উৎপাদনের প্রক্রিয়া ও কর্মপ্রচেষ্টায় ভিন্নতার কারণে শিল্পকে প্রধানতঃ নিন্মেক্ত ভাগে

ক-. প্রজনন শিল্প: যে শিল্পে উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় সৃষ্টি বা উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে প্রজনন শিল্প বলে । যেমন নার্সারী, হ্যাচারী, হাঁস- মুরগীর খামার, পশুপালন ইত্যাদি।

খ-নিষ্কাশন: যে প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভুগর্ভ. পানি বা বায়ুহতে সম্পদ উত্তোলন বা আহরণ করা হয় তাকে নিষ্কাশন শিল্প বলে। খনিজ পদার্থ উত্তোলন. মৎস্য শিকার ইত্যাদি এরূপ শিল্পের আওতাভুক্ত ।

গ. নির্মাণ শিল্প: যে প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাস্তাঘাট , সেতু, বাঁধ, দালানকোঠা ইত্যাদি নির্মাণ করা হয় তাকে নির্মাণ শিল্প বলে।

ঘ. যান্ত্রিক বা সর্জন শিল্প: শ্রম ওযস্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাঁচামাল বা অর্ধপ্রস্তত জিনিসকে মানুষের ব্যবহারোপযোগী চুড়ান্ত পণ্যে প্রস্তুত করার প্রচেষ্টাকে যান্ত্রিক বা সর্জন শিল্প বলে। এরূপ শিল্পকে বিশ্লেষণ, যৌগিক, ব্যবহারোপযোগী চুড়ান্ত পণ্যে প্রস্তত করার প্রচেষ্টাকে যান্ত্রিক সর্জন শিল্প বলে । এরূপ শিল্পকে বিশ্লেষণ, যৌগিক. প্রক্রিয়াভিত্তিক, সংযোজন ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা যায়।

ঙ. সেবা পরিবেশক শিল্প: মানুষের জীবনযাত্রা সহজ, নির্বির ও আরামদায়ক করার কাজে নিয়োজিত শিল্পকে সেবা পরিবেশক শিল্প বলে। গ্যাস সরবরাহ, বিদ্যুৎ সংযোগ, টেলিফোন, পানি সরবরাহ ইত্যাদির দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান এ শ্রেণীভুক্ত।


২. বাণিজ্য: বাণিজ্যের কাজ হলো শিল্পে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বন্টন করা এবং বন্টন কালে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা সমূহ দূর করে ভোগ কারীর নিকট পণ্য পৌছে দেয়া । বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, কালগত, ঝুঁকিগত, অর্থগত, স্থানগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে পণ্যসামগ্রী ভোগকারীর নিকট পৌছানো হয়। বাণিজ্যের আওতা নিম্নরূপ:

ক) পণ্যবিনিময় বা ক্রয়-বিক্রয়: পণ্য দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয়কে বিনিময় বলে। বিনিময়ের মাধ্যমে পন্যের মালিকানা হস্তারিত হয় এবং ব্যক্তিগত বাস্বত্্গত প্রতিবন্ধকতা দূর হয়। পণ্য বিনিময় দু’প্রকার

১. অভ্যন্তরীণ পণ্য বিনিময় দেশের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে যে বিনিময় সংঘটিত হয় তাকে অভ্যন্তরীণ বিনিময় বলে । এটা আবার দুধরনের হয় । যথা পাইকারী, বিনিময় ও খুচরা বিনিময় ।

২. বৈদেশিক পণ্য বিনিময় একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের সাথে অন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের পণ্য বিনিময় হলে তাকে বৈদেশিক পণ্য বিনিময় করে উহা আবার তিন ধরনের যথা-আমদানী, রপ্তানি, ও পুনঃরপ্তানী।

খ)পরিবহন: পরিবহনের মাধ্যমে পণ্যের স্থানগত প্রতিবন্ধকতা দুর করা হয় | যেমন -বরিশালে উৎপাদিত চাল ঢাকায় সবরাহ করা হয়। পণ্য সামন্ত্রী উৎপাদন এবং উৎপাদনের পর ভোক্তার কাছে পৌছানের ক্ষেত্রে যে সকল ঝুঁকির সম্মুক্ষীণ হয় বীমার মাধ্যমে সেই ঝুঁকিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করা হয়।

গ) গুদামজাতকরণ: উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী সুবিধাজনক সময়ে বিয়ের জন্য গুদাম ঘরে যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করতে হয়। পণ্য সামস্ত্রী ষখাষধ ভাবে সংরক্ষণ করে সময়গত প্রতিবন্ধকতা দূর করা হয়।

ঘ) ব্যাংকিং ব্যবসায়ে প্রয়োজনীয় স্থায়ী ও চলতি মূলধন সরবরাহ করে ব্যাংকসমূহ বাণিজ্যের অর্থগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে।

প্রত্যক্ষ সেবা: মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে স্বাধীনপেশায় নিয়োজিত ডাক্তারী ব্যবসায় যেমন ক্লিনিক ও হাসপাতাল ,আইন ব্যবসায়ী যেমন এটরীফার্ম,ইঞ্জিনিয়ারি ফার্ম ইত্যাদি প্রত্যক্ষ সেবাবিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান সঙ্গত কারণেই ব্যবসায়ের আওতায় আসে । উপরের আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে, ব্যবসায়ের আওতা অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। সভ্যতার প্রাথমিক স্তরে এর আওতা এত ব্যাপক ছিলনা । আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে এর আওতা আরও বৃদ্ধি পাচেছে এবং ভবিষ্যতে এর প্রসার আরও বাড়বে, এতে কোন সন্দেহ নেই। নিন্নে চিত্রের সাহায্যে ব্যবসায়ের আওতা বা পরিধি তুলে ধরা হল:



*** ব্যবসায়ের কার্যাবলী সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১) উৎপাদন : যেকোনো ব্যবসায়ের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো উৎপাদন করা । আমরা জানি শিল্পকে উৎপাদনের বাহন বলা হয় অর্থাৎ শিল্পের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পণ্যদ্রব্য উৎপাদিত হয়। প্রকৃতি হতে সম্পদ আহরণ করে তা মানুষের ব্যবহারের উপযোগ সৃষ্টি করাই হলো উৎপাদন।

২) ক্রয়: ব্যবসায়ের কার্যক্রম বা উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রাখতে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল ও পণ্যসামগ্রী ক্রয় করতে হয়।

৩) বিক্রয় : বিক্রয় ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা যার মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে পণ্যের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়।

৪) অর্থসংস্থান : ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনার জন্য অর্থের প্রয়োজন | নিজস্ব মূলধন বা খণ নিয়ে ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৫)পরিবহন : ব্যবসায়ের উৎপাদিত পন্য সামগ্রী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করার জন্য পরিবহন একটি বড় ভূমিকা পালন করে । তাছাড়া ব্যবসায়ের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি আনা নেওয়ার জন্য পরিবহনের প্রয়োজন হয়।

৬) গুদামজাতকরণ: ব্যবসায়ের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদামজাতকরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ । আমরা দেখতে পাই যে এক মৌসুমের দ্রব্য অন্য মৌসুমেও পাওয়া যায় আর তা সম্ভব হয়েছে কেবল গুদামজাতকরণের প্রক্রিয়া।

৭) বিজ্ঞাপন ও প্রচার: ব্যবসায়ের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য সম্পর্কে ক্রেতাদের অবহতি করা বাজানানোর জন্য বিজ্ঞাপন ও প্রচার কার্য করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা টেলিভিশনে দেখতে পাই. নানান ধরনের পণ্যের সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন বা প্রচার করছে। বিজ্ঞাপন পণ্যের জ্ঞানগত উপযোগ সৃষ্টিকরে।

৮) বিমা: যেকোনো ব্যবসায়ে ঝুঁকি বিদ্যমান । ব্যবসাধের ঝুঁকি হ্রাস করতে বা কমাতে বিমা গ্রহণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৯) হিসাবরক্ষণ: ব্যবসায়ের হিসাবরক্ষণ করা একটি মৌলিক কাজ। ব্যবসায়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য ব্যবসায়ের দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেনসমূহ হিসাবরক্ষণ করতে হয়।

১০) প্রমিতকরণ ও পযায়িতকরণ: ব্যবসায়ের পণ্যদ্রব্যের আকার, ওজন ও গুণাগুণ অনুসারে মান নির্ধারন করতে হয় এবং প্রণ্যের প্রকৃতি অনুযায়ী পণ্যকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা ব্যবসায়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যেমন : বাজারে ৫০০ টাকা মূল্যের স্যম্পু পাওয়া যায় আবার ৫ টাকা মুল্যেরও স্যম্পু পাওয়া যায়। এটি করা হয় মূলত ক্রেতার ক্রয় -বিক্রয়ের সুবিধার্থে।

১১.পণ্যের মোড়কীকরণ: পণ্যের মোড়কীকরণ করা হয় মূলত পাশ্যকে সুরক্ষিত রাখতে এবং ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। তাছাড়া পণ্য মোড়কীকরণ ভিতরে পণ্য রক্ষা করার জন্য কাজ করে । যেকোনো পণ্য তৈরির মূল লক্ষ্য হল গ্রাহকদের আকর্ষণ করা এবং তাদের আপনার পণ্যটি কিনতে উৎসাহিত করা। আকর্ষণীয় এবং উন্নতমানের হওয়া প্রয়োজন।

১২ বাজার গবেষণা ও পণ্য উন্নয়ন : বর্তমানে ব্যবসায় খুবই প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠান ভালো মানের পণ্য উৎপাদন করে গ্রাহকরা সেই পণ্য ক্রয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে । তাই পণ্য উৎপাদনের পূর্বে বাজার গবেষণা করে পণ্যের মান উন্নয়ন করতে হবে।

বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি দেশে, প্রতিটি সমাজে,, প্রতিটি ব্যক্ত বা প্রতিষ্ঠানের নিকট ব্যবসায়ের গুরুত্ব এত বেশী যে, এসন্বন্ধে কিছু বলার চেষ্টা করা হবে বাহুল্যতা। বিশ্বের রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি ,সমাজনীতি, অর্থনীতি সব কিছুই ব্যবসায় দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত। চলমান বিশ্বের সব কিছুই থেমে যাবে যদি ব্যবসায় থেমে যায়। বিশ্বের প্রতিটি মানুষই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ব্যবসায় দ্বারা উপকৃত হচ্ছে। অন্যদিকে , জীবিকা অর্জনের সবচেয়ে স্বাধীন, সহজতম ও সম্মান জনক উপায় হলো ব্যবসায়। ব্যবসায়ের মাধ্যমে ধন সম্পদ অর্জন করে নিজের, সমাজের তথা দেশের অগ্রগতি সাধন করা সম্ভব।

অপর দিকে. আমরা যদি উন্নত বিশ্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখবো সে সব দেশের উন্নতির মূলে রয়েছে ব্যবসায় তথা শিল্প ও বাণিজ্যে উন্নতি । ব্যবসায় করেই ইংরেজরা দুশ বছর আমাদের শাসন ও শোষণ করেছে। বর্তমান বিশ্বে যে সব দেশে পৃথিবীতে আদিপত্য ও প্রভাব বিস্তার করছে তাদেরও মূল শক্তি হচ্ছে ব্যবসায় – বাণিজ্য। বর্তমান বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদ না থাকলেও ব্যবসায়িক তথা অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যাদি চলছে। গুরুত্ব পাচ্ছে দেশে দেশে অর্থনৈতিক কুটনীতি বা Economic Diplomacy. ব্যবসায় বাণিজ্যের মাধ্যমেই চলছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রচেন্টা। কাজেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কল্যাণে ব্যবসায়ের গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। তবুও বিভিন্ন দিক থেকে ব্যবসায়ের গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করা হল:

১) দেশের ছড়ানো ছিটানো সম্পদের উপধুক্ত ব্যবহার সম্ভব কেবল ব্যবসায়ের মাধ্যমেই।

২) ব্যবসায়ের জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগ ,আর বিনিয়োগ আসে সঞ্চয় থেকে। কাজেই ব্যবসায় জন্যই সঞ্চয়ে উৎসাহ আসে।

৩) ব্যবসায়ের মাধ্যমে ব্যক্তিগত আয় ও সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি পায়, ফলে জাতীয় আয়ও বৃদ্ধি পায়।

৪) ব্যবসায় প্রয়োজনে কাঁচামাল ও পণ্য আনা নেওয়ার জন্য সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটে। বূটিশরা পদ্মা নদীর উপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরী করে রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছিল ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই।

৫) ব্যবসায়ের ফলে ব্যক্তির কার্যদক্ষতা, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনৈতিক উন্নতি সহজ হয়।

৬) ব্যবসায়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও গবেষণার ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধিত হয় । ফলশ্রুতিতে মানুষ পায় কম দামে উন্নতমানের নিত্যনুন পণ্য।

৭) ব্যবসায় -বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে সরকারের রাজব আদায় প্রচুর বৃদ্ধি পায় । ফলে সরকারের অর্থনৈতিক সামর্থ বৃদ্ধি পায় এবং ভদনগণ এর সুফল ভোগ করে।

৮) ব্যবসায় -বাণিজ্যের বদৌলতে পৃথিবীর যে কোন দেশের যে কোন স্থানে উৎপাদিত যে কোন পণ্য আমরা ঘরে বসেই পাচ্ছি। এতে আমাদের জীবন হয়েছে সহজ আরামদায়ক ও উন্নত।

৯) নিজের ও অন্যদের কর্মসংস্থানের সবচেয়ে সহজ ও উত্তম উপায় হলো ব্যবসায় -বাণিজ্য। আমাদের মত দেশের মারাত্মক বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল ব্যবসায় -বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো।

১০) ব্যবসায়ের সাহচর্ষে ও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভের কারণে দেশে দক্ষ উদ্যোক্তা শ্রেণী ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় গড়ে উঠে। যাদের ভূমিকার কারণে দেশের অর্থনীতি ও সমাজ উপকৃত হয় । বলা হয় ” একশত ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে একজন উদ্যোক্তা অধিক গুরুত্বপূর্ণ”

১১) ব্যবসায়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে দেশে শিক্ষা ও সংস্কৃতির মান উন্নত হয়।

১২) আন্তর্জাতিক ব্যবসায় -বাণিজ্যের কারণে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ও বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এতে করে অজ্ঞানার্জন ও পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *