HSC 2021 Civics Assignment Answer All Week | HSC Assignment Solution 2021

HSC 2021 Civics Assignment 1st Week


HSC 2021 Civics Assignment Answer 1st Week


এইচএসসি ২০২১ পৌরনীতি ও সুশাসনের ১ম  সপ্তাহের সমাধান


শিরোনাম: – পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়বস্তু ও পরিধি ক্রম বিকাশ।

ভুমিকা: রাষ্ট্রের সাথে নাগরিকদের এবং অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে জ্ঞানচর্চার সুনির্দিষ্ট একটি ধারা হিসেবে পৌরনীতি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আধুনিককালে প্রত্যেক নাগরিক ও সংগঠন রাষ্ট্রের নিকট হতে অধিকতর দায়িত্ব সম্পন্ন সেবা প্রত্যাশা করে। এমত অবস্থায়, বাস্তবতায় পৌরনীতির আলোচনায় সুশাসন বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে।


পৌরনীতি ও সুশাসনের পরিধি : পৌরনীতি ও সুশাসনের পরিধি ব্যাপক। পৌরনীতি ও সুশাসনের পরিধি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল :

১/ নাগরিকতা বিষয়ক : পৌরনীতি ও সুশাসন মূলত নাগরিকতা বিষয়ক বিজ্ঞান নাগরিকের উত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন, প্রতিষ্ঠা, করা পৌরনীতি ও সুশাসনের, প্রধান লক্ষ্য। পৌরনীতি ও সুশাসন নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য, সচেতনতা, সুনাগরিকতা, নাগরিকতা অর্জন ও বিলোপ, নাগরিকতার অর্থ ও প্রকৃতি, সুনাগরিকের গুণাবলী প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করে।

২/ মৌলিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কিত : মৌলিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত ও মানব সভ্যতার ইতিহাসে পরিবার হলো আদি ও অকৃত্রিম প্রতিষ্ঠান। কালের বিবর্তন ধারায় পরিবারের সম্প্রসারণ হয়েছে এবং গড়ে উঠেছে রাষ্ট্র ও অন্যান্য বহুবিধ সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। পৌরনীতি ও সুশাসন পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও বিকাশ, রাষ্ট্রের কার্যাবলী প্রভৃতি মৌলিক প্রতিষ্ঠান পৌরনীতি ও সুশাসন এর অন্তর্ভূক্ত।

৩/ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনা : পৌরনীতি ও সুশাসনের সাথে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের ধারণা, রাষ্ট্রের উৎপত্তি, রাষ্ট্রের সংবিধান, সংবিধানের শ্রেণী বিভাগ, সংবিধানের বৈশিষ্ট্য, সরকার, সরকারের শ্রেণী বিভাগ, সরকারের বিভিন্ন অঙ্গ, জনমত, জনমতের বাহন, নির্বাচকমণ্ডলী, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন প্রভৃতি পৌরনীতি ও সুশাসনের অন্তর্ভূক্ত।

8/ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিমুর্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা : পৌরনীতি ও সুশাসন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। আইন, আইনের উৎস ও প্রকৃতি, আইন ও নৈতিকতা, স্বাধীনতা, স্বাধীনতার প্রকৃতি, স্বাধীনতার রক্ষাকবচ, সাম্য ও স্বাধীনতা, সাম্যের প্রকারভেদ প্রভৃতি সম্পর্কে পৌরনীতি ও সুশাসন আলোচনা করে।

৫/ রাজনৈতিক ঘটনাবলি : পৌরনীতি ও সুশাসন রাজনৈতিক বিভিন্ন ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনা করে। যেমন: বাংলাদেশে পৌরনীতি ও সুশাসন পলাশীর যুদ্ধ, সিপাহী বিদ্রোহ, ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, ১৯৭১. সালের: মুক্তিযুদ্ধ; সামরিক. অভ্যুত্থান: ইত্যাদি রাজনৈতিক পর্যায় সম্পর্কে আলোচনা করে৷ 

৬/ সুশাসন সম্পর্কে আলোচনা : পৌরনীতি ও সুশাসন রাষ্ট্রের সুশাসনের বহুমাত্রিক ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করে। সুশাসনের উপাদান, সুশাসনের সমস্যা, সুশাসনের সমস্যার সমাধান, সুশাসনের সমস্যা সমাধানে সরকার ও জনগণের ভূমিক সম্পর্কে পৌরনীতি ও সুশাসন আলোচনা করে।

৭/ নাগরিকের অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা : পৌরনীতি ও সুশাসন নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্যের বর্তমান স্বরূপ সম্পর্কে আলোচনা করে এবং এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নাগরিক জীবনের আদর্শ ও স্বরূপের ইঙ্গিত প্রদান করে।

৮/ নাগরিকের স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিক নিয়ে আলোচনা : পৌরনীতি ও সুশাসন নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যাবলীর সাথে সম্পৃক্ত স্থানীয় সংস্থার (যেমন: ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন ইত্যাদি) গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করে। নাগরিকের জাতীয় বিষয় (যেমন : স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি, মুক্তিযুদ্ধ, বিভিন্ন জাতীয় নেতার অবদান, দেশ রক্ষায় নাগরিকের ভূমিকা, জাতীয় রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সমূহ) সম্পর্কে আলোচনা করে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন এবং বিভিন্ন ঘটনাবলি সম্পর্কেও পৌরনীতি ও সুশাসন আলোচনা করে।

৯/ নাগরিক জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়াদি :  পৌরনীতি ও সুশাসন আধুনিক নাগরিক জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা করে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানও পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। যেমন : ইভটিজিং, দুর্নীতি, ইলেকট্রনিক গভর্নেস (ই- গভর্নেস), দারিদ্র্য বিমোচনের মতো বিষয়গুলোর আলোচনা পৌরনীতি ও সুশাসন এর পরিধি-কে সমৃদ্ধ করেছে। 

১০/ সুশাসন ও ই-গভর্নেন্স : পৌরনীতি ও সুশাসন বর্তমান সময়ে সুশাসন ও ই গভর্নেন্স নিয়ে আলোচনা করে। সরকার কিভাবে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষ নির্বাচন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে পারে সে বিষয়ে পৌরনীতি ও সুশাসন আলোচনা করে। 

পরিশেষে বলা যায় যে, পৌরনীতি ও সুশাসনের পরিধি ও বিষয়বস্তু ব্যাপক ও বিস্তৃত। নাগরিকের জীবন ও কার্যাবলী যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত পৌরনীতি ও সুশাসনের পরিধিও ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।


সুশাসনের বৈশিষ্ট্য :  সুশাসনের মৌলিক ও প্রাথমিক চরিত্র হচ্ছে সুশাসনের আওতায় সকল কাজ হবে অপব্যবহার ও দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায় পরায়ন ভিত্তিক ও আইনের শাসনের প্রতি শর্তহীনভাবে অনুগত। সুশাসনের এই চরিত্র বা বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলে তা কয়েকটি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

(ক) অংশগ্রহণ : নারী – পুরুষ নির্বিশেষে শাসনের কাজে সকলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণ হচ্ছে সুশাসনের অন্যতম ভিত্তি । রাষ্ট্রের আয়তন ও জনসংখ্যা অধিক হওয়ার কারণে বর্তমানকালে প্রত্যক্ষভাবে সকলে শাসন কাযে অংশগ্রহণ করতে পারে না। সে কারণে পরোক্ষ অংশগ্রহণের অর্থ হচ্ছে, বৈধ ও কার্যকরী যে কোন সংগঠন গড়ে তোলার স্বাধীনতা এবং এসব সংগঠনের মাধ্যমে মতামত প্রকাশের অবারিত সুযোগ । শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রের সুশীল সমাজকেও নিরপেক্ষ , কল্যাণকর ও সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সুসংগঠিত থাকতে হবে।

(খ) আইনের শাসন : সুশাসনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আইনের শাসন । সুশাসনের জন্য এমন আইনগত কাঠামোর উপস্থিতি প্রযোজন যা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে সক্ষম । নিরপেক্ষভাবে আইন প্রয়োগের বিশেষভাবে প্রয়োজন মানবাধিকার সংরক্ষণ , বিশেষ করে চরম দরিদ্র ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ৷ আবার এসব কিছুর জন্য প্রয়োজন স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নিরপেক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

(গ) স্বচ্ছতা : সাধারণভাবে স্বচ্ছতা বলতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও তা বাস্তবায়নে আইনসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করাকে বোঝায় । কেবল তাই নয় , স্বচ্ছতা দ্বারা এটিও বুঝানো হয় যে, আইনসম্মতভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে যারা প্রভাবিত হবে তাদের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে তথ্য প্রবাহ অবাধ করা এবং তথ্য জানার অধিকার উন্মুক্ত করা । এক কথার অর্থ হচ্ছে তথ্য প্রবাহ যেন সকল স্তরের জনগণের কাছে সহজবোধ্য হয় এবং বিভিন্ন মাধ্যমে সকলের কাছে পৌছায়।

(ঘ) সংবেদনশীলতা : সংবেদনশীলতা হচ্ছে শাসনযন্ত্রের এমন দক্ষতা, যোগ্যতা ও সামর্থ্য যার মাধ্যমে জনসাধারণের বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য সকল বৈধ প্রয়োজন ও দাবী – দাওয়া যথাসময়ে পুরণ করা সম্ভব হয় । অর্থাৎ, সরকার জনগণের আশা – আকাঙ্ক্ষা পূরণে যথাসময়ে সাড়াদানে প্রস্তুত থাকাটাই সংবেদনশীলতা ।

পৌরনীতি ও সুশাসনের ক্রমবিকীশ: পৃথিবীর যেকোনো দেশের সরকার সব সময়ই প্রত্যাশা করেন যে তাদের দ্বারা পরিচালিত শাসনব্যবস্থা সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হোক । উন্নত শাসন সংক্রান্ত চিন্তার বিবর্তনের মধ্যে দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বর্তমানের সুশাসন সংক্রান্ত ধারণা । এক কথায় বলা যায়, বর্তমানে সুশাসনের ধারণাটি সময়ের বিবর্তনে গড়ে উঠা একটি বিষয় । পৌরনীতিতে নাগরিক জীবনের সামগ্রিক দিক ফুটে ওঠে । আর সুশাসন পৌরনীতির একটি অংশ, যাতে নাগরিক শাসন সম্পর্কিত দিক তুলে ধরা হয়। এই দিক থেকে পৌরনীতি ও সুশাসন একই সূত্রে গাঁধা বলা যায়। পৌরনীতির উদ্দেশ্য হলো নাগরিককে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং উত্তম নাগরিক জীবনের দিক নির্দেশনা দেওয়া | আর সুশাসনের উদ্দেশ্য হলো শাসন প্রক্রিয়াকে উন্নত ও কল্যাণমুখী করে গড়ে তোলা এবং নাগরিকদের উত্তম জীবন নিশ্চিত করা । সুতরাং বলা যায় ,   পৌরনীতি ও সুশাসনের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন।


সমাপ্ত


পরবর্তী এসাইনমেন্ট এর সমাধান খুব শিঘ্রই আসছে —-


 



 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *