HSC 2021 Social Work Assignment Answer All Week

HSC 2021 Social Work Assignment Answer 1st Week

ক) সমাজকর্মের সংজ্ঞা: সমাজকর্মের ধারণায় ওয়াল্টার এ ফ্রিডল্যান্ডার। (Walter A frielander) বলেন, সমাজকর্ম হলো মানবীয় সম্পর্ক বিষয়ক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও দক্ষতা ভিত্তিক এমন এক পেশাদার সেবাকর্ম যা বক্তিগত ও সামাজিক সন্তুষ্টি এবং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এককভাবে বা দলীয়ভাবে বক্তিকে সহায়তা করে।

(Social work is a professional service based upon scientific knowledge and skills in human relations, which assists individuals alone or in groups to obtain social and personal. satisfaction ‘and independence. )

সমাজকর্ম বিশ্বকোষ (Encyclopedia of Social Work)_ এ সমাজকর্মের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “সমাজকর্ম হলো একটি পেশাগত ও একাডেমিক শৃঙ্খলা, যা বক্তি, পরিবার, দম্পতি, দল ও সমষ্টির গুণগত জীবনমান অর্জন ও কল্যাণে গবেষণা, নীতি, সমষ্টি সংগঠন, সরাসরি অনুশীলন, সঙ্কটে হস্তক্ষেপ ও শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে উন্নয়নে সচেষ্ট, যার সুফল সামাজিকভাবে অসুবিধগ্রস্থ যেমন- দারিদ্র, মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা বা অক্ষমতা এবং জনগণের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সামাজিক অবিচার দূর করে।

(Social work is a professional and academic discipline that seeks to improve the quality of life and subjective well-being of individuals, families, couples, groups, and communities through research, policy, community organizing, direct practice, crisis intervention, and teaching for the benefit of those affected by social disadvantages such as poverty, mental and physical illness or disability and social injustice, including violations of their civil liberties and human rights. )


খ) সমাজকর্মের সংখ্যার তুলনামূলক উপস্থাপন:

উপরে আলোচিত ওয়াল্টার এ ফ্রিডল্যান্ডার এর সমাজকর্মের বিশ্বকোষ এর সংজ্ঞা দুটিতে সমাজকর্মকে একটি পেশাগত কর্ম বলা হয়েছে। উভয় সংঘাতে দেখা যায় যে সমাজকর্ম একটি পেশাদার সেবাকর্ম যা সতন্ত্র ব্যক্তি, দল কিংবা সামাজিক সন্তুষ্টি অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

ফিল’ন্ডারের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে সমাজকর্ম স্বাধীনতা অর্জনে এককভাবে বা দলীয়ভাবে বক্তিকে সহায়তা করে। তেমনিভাবে সমাজকর্ম বিশ্বকোষ – এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে সমাজকর্ম সামাজিক অসুবিধা গ্রস্থ যেমন দারিদ্র্য, মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা বা অক্ষমতা এবং জনগণের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সামাজিক অবিচার দূর করে। ডব্লিউ এ ফিনল’ন্ডের ও সমাজকর্ম বিশ্বকোষ উভয় সংজ্ঞাতেই সমাজকর্মের ধারণার যথেষ্ট মিল রয়েছে।


গ) সমাজকর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

মানুষ সামাজিক জীব মানুষ সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে আসছে। কারন কোন মানুষের পক্ষেই একা বসবাস করা সম্ভব নয়। সমাজ পরিবর্তনশীল এবং এই পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে মানুষ অনেক সময় ব্যর্থ হয়। যার ফলে সমাজে সৃষ্টি হয় নানা সামাজিক সমস্যা, আর এ সকল সমস্যার সমাধান এবং মানুষকে তার সামাজিক পরিবেশের প্রতিটি স্তরের জনগণকে সক্রিয় ও সামঞ্জস্য স্থাপনে সক্ষম করে তোলার জন্যই সমাজকর্মের উদ্ভব। সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিম্নরুপ:

১) জনগণের সমস্যার সমাধান, উপযোজন এবং ক্ষমতার উন্নয়ন করা।

২) সম্পদ সেবা ও সুযোগের সাথে মানুষের সংযোগ ঘটানো।

৩) কার্যকরী মানবসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

৪) সামাজিক নীতির বিকাশ ও উন্নয়ন।

৫) কার্যকর সামাজিক ভূমিকা পালনের জন্য বক্তিগত ও সামাজিক সম্পদের সমাবেশ করা।

৬) সামাজিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করা।

সার্বিকভাবে বলা যায় যে, সমাজকর্মের লক্ষ্য হলো সমাজ জীবন থেকে সকল প্রকার জটিল সমস্যা দূর করে পরিকল্পিত উপায়ে কাক্ষিত ও গঠনমূলক সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ উদ্দেশে সমাজকর্ম জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে সকল মানুষের বক্তিগত, দলীয় ও সমষ্টিগত সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে।


ঘ) সমাজকর্ম শিক্ষঅর প্রয়োজনীয়তার পক্ষে যুক্তিকতা দেখাও?

আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কারণ, হাজারো সামাজিক সমস্যায় জর্জরিত আমাদের এই বাংলাদেশ। পৃথিবীর অন্যান্য সমস্যা সংকুল দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও সমাজকর্মের প্রয়োগক্ষেত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজকর্ম পাঠের। সমাজকর্মে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় দিককেই সমান গুরুত্ব প্রদান করা হয়। সে নিরিখে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নে সমাজকর্ম পাঠের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। আধুনিক সমাজের সমস্যাগুলো বহুমুখী ও জটিল প্রকৃতির। শিল্প বিপ্লবের ফলে সমাজ জীবনে যেমন যান্ত্রিক উৎকর্ষতার সৃষ্টি হয়েছে তেমনি সমাজে সৃষ্টি হয়েছে জটিল ও বহুমাত্রিক সমস্যার। বিভিন্নমূখী চাহিদা ও সমস্যার কারণ, প্রভাব ইত্যাদি সম্পর্কে যথাযথ অনুসন্ধানে সমাজকর্মের বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানের অপরিহার্যতা উল্লেখযোগ্য। সমাজকর্ম তার মৌলিক ও সহায়ক পদ্ধতির অনুশীলনের মাধ্যমে সমস্যার উৎস, কারণ, প্রকৃতি ও প্রভাব নির্ণয় করে সেগুলোর সমাধানে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। আমাদের সম্পদ সীমিত কিন্তু চাহিদা অসীম। এই সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ববহার নিশ্চিত করে সমাজে বিরাজমান, বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করতে বাস্তবমুখী কর্মসূচি প্রণয়ন ও যায় তেমনি ব্যক্তির ক্ষমতার বিকাশ সাধন করে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানবীয় সকল প্রকার সম্পদের সর্বোচ্চ স্বদ্যবহারে সমাজকর্মের জ্ঞান বিশেষভাবে উপযোগী। সমাজকর্মের জ্ঞান, মূল্যবোধ ও নীতিমালাগুলো আত্মস্থ ও অনুসরণ করে একজন সমাজকর্মী সমাজের আদর্শ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।

সুতরাং বলা যায় যে, আধুনিক জ্ঞান- সভ্যতার বিকাশ ও ধারাবাহিকতায় সমাজকর্ম অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত। শুধু বাংলাদেশেই সমাজকর্ম পাঠের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা নয় বরং সারা বিশ্বে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তাই সমাজ ও মানুষের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়নে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সমাজকর্ম শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।


সমাপ্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *