HSC Islamic History and Culture 1st Paper 4th week Assignment Answer 2021

HSC Islamic History and Culture 1st Paper 4th week Assignment Answer 2021

অ্যাসাইনমেন্ট: মহানবি হযরত মুহাম্মাদ (স) এর মদিনা জীবনে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা ও এর সমাধানের উপর একটি প্রতিবেদন তৈরি।

শিখনফল:

  • মদিনা সনদ ও মদিনায় আদর্শ রাষ্ট্রগঠনে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে।
  • মহানবি (স) এর সময়ের বিভিন্ন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল। ব্যাখ্যা করতে পারবে
  • হুদায়বিয়ার সন্ধির পটভূমি, শর্তাবলি ওতাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • মক্কা বিজয়ের ঘটনা বর্ণনা করতে পারবে এবং এখানে প্রতিফলিত শান্তিনীতির ধারণা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রয়ােগ করতে অনুপ্রাণিত হবে।

 নির্দেশনা:

  • মদিনা সনদ ও এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা
  • বদর ও উহুদ যুদ্ধের ফলাফল বিশ্লেষণ
  • ইসলামের প্রসারে সুদায়বিয়ার সন্ধির গুরুত্ব পর্যালােচনা
  • রক্তপাতহীন মক্কা বিজয়ে শান্তি নীতির ধারণ ব্যাখ্যা

HSC Islamic History and Culture 1st Paper 4th week Assignment Answer 2021
We will suggest the students not copy this answer. This is a sample solution. Think yourself. If you cannot find any solution, then you can take help from this solution.

তারিখঃ ১৭-০৮-২০২১ ইং

বরাবর,
অধ্যক্ষ
কে কে ‍বি ‍স্কুল, ঢাকা।

বিষয়ঃ মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) এর মদিনা জীবনে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা ও এর সমাধান সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।


জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং মা.মে.স.ক.১৩৪-৮ তারিখঃ ১১-৮-২০২১ অনুসারে ” মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মদিনা জীবনে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা ও এর সমাধান সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ” নিম্নে পেশ করছি।
 
“মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মদিনা জীবনে ইসলামপ্রচারের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা ও এর সমাধান”

মদিনা সনদ:
মহানবী (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করার পর সেখানে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র স্থাপন করার পরিকল্পনা করেন। মহানবী (সা.) মদিনার সংহতির চিন্তা করে সেখানকার অধিবাসীদের নিয়ে তথা পৌত্তলিক , ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের মধ্যে এক লিখিত সনদ বা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। আর এ সনদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার ঘােষণা দেন। এ সনদকেই ‘ মদিনা সনদ বলা হয়। ইসলামের ইতিহাসে এ সনদের গুরুত্ব ‘ লীগ অব নেশন্স’, বা ‘ জাতিসংঘ ‘ ‘ চার্টার অব হিউম্যান রাইটস ‘ বা জেনেভা কনভেনশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী ছিল ।

মদিনা সনদের গুরুত্ব ও তাৎপর্য:

আরবের ইতিহাসে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুমহান উদ্দেশ্য নিয়ে অন্য কোনাে ব্যক্তি বা নেতা এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেননি। শান্তি প্রতিষ্ঠার বাস্তব উদ্যোগের প্রেক্ষিতে মদিনা সনদ বিভিন্ন দিক দিয়ে বহু গুরুত্ব বহন করে। মহানবী (সা.) যে শুধু একজন ধর্মপ্রচারকই নন; বরং বিশ্ব ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক বিপ্লবী মহাপুরুষ ছিলেন , তাও এ সনদে প্রমাণিত হয় । মদিনায় শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত মদিনা সনদ পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান। এর পূর্বে এরূপ কোনাে। মৈত্রী সংবিধান ছিল না। এটি তৎকালীন যুগেই বরং সর্বযুগে সর্বকালের মহামানবের জন্য শ্রেষ্ঠত্বের পরিচায়ক। ঐতিহাসিক মুইর বলে , ” এ চুক্তি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) – এর অসামান্য মাহাত্ম ও অপূর্ব মননশীলতার পরিচায়ক।

ড. হামিদুল্লাহ বলেন , ” মােট ৪৭ টি ধারাবিশিষ্ট এ সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র । ভ্রাতৃসংঘ ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও মদিনা সনদ’ মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়কে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করে হিংসাদ্বেষ ও কলহের অবসান করে এবং বিপদে সবাই একএ নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে। মুসলিম ও অন্যদের সাথে সকল প্রকার পার্থক্য নিরসনে এর কার্যকারিতা ধারাগুলাের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায়। রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও সে সময় আরবের মানুষদের মধ্যে কোনাে রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সা.) মদিনায় হিজরতের পর জাতি – ধর্ম নির্বিশেষে রক্তের ভিত্তির স্থলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মদিনাবাসীর মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য স্থাপিত হয় ।

একমাত্র রাসূলুল্লাহ (সা.) – এর প্রণীত মদিনা সনদই মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সবার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও উদারতা ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) ধর্মীয় স্বাধীনতা , সার্বভৌমত্ব , মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর প্রণীত মদিনা সনদ মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সকলের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। মদিনার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লােকেরা পরস্পরের ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।” – এ শর্ত দ্বারা হযরত মুহাম্মদ (সা.) যে মহানুভবতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন তা বিশ্বের ইতিহাসে সত্যিই বিরল ।

বদর ও উহুদের যুদ্ধের ফলাফল:


বদর যুদ্ধের ফলাফল: বদর যুদ্ধ ইসলামের সর্বপ্রথম যুদ্ধ এবং অবিস্মরণীয় এক ঘটনা। মুসলিম শক্তি এ যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ব জয়ের সােপানে আরােহণ করে। এ যুদ্ধে কুরাইশ শক্তিকে পর্যুদস্ত করে মুসলিমরা প্রথম বারের মতাে বিশ্বময় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ। এ যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রচার প্রসারের দিগন্ত উন্মােচিত হয়। বদর যুদ্ধে বিজয়ের ফলে মুসলিমদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হয় । মুসলিমগণ প্রচুর গনীমত লাভ করে। এতে ইসলামী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হয়। উহুদ যুদ্ধের ফলাফলঃ উহুদ যুদ্ধ মুসলিমদের জন্য ছিল ধৈর্যের অগ্নি পরীক্ষা। একথা সত্য নিরবচ্ছিন্ন বিজয় কোনাে জাতির ভাগ্যেই জুটে না। বিজয়ের আনন্দ ও পরাজয়ের গ্লানি সঙ্গী করেই বৃহত্তর সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে হয়। এজন্য প্রয়ােজন ধৈর্যের। এ পরীক্ষায় মুসলিমগণ ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

ঈমানের দৃঢ়তা ও যুদ্ধোত্তরকালে আল্লাহ তায়ালা সূরা আলে ইমরানে মুসলিমদের খাঁটি মুমিন হতে এবং হকের ওপর দৃঢ়পদ থাকতে নির্দেশ প্রদান করেন। এ যুদ্ধের ফলে মুসলিমদের ঈমান আরাে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেদিন যুদ্ধের প্রথম দিক জয় লাভ করেও পরবর্তীতে তাদের পরাজয় মেনে নিতে হয়েছিল। তাই পরবর্তী যত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল সেগুলােতে তারা মহানবী সা.) – এর আদেশ নির্দেশ পুরােপুরি মেনেই যুদ্ধ করেছিলেন। ফলে বলা যেতে পারে , উহুদ যুদ্ধ মুসলিমদের জন্য ঈমানী পরীক্ষা হিসেবে কাজ করেছিল । ইহুদিদের মদিনা সনদের শর্ত ভঙ্গের শাস্তি ও ঐতিহাসিক পি.কে.হিট্টি বলেন, ইহুদি বনু নযির ও বনু কায়নুকা গােত্র মদিনা সনদের শর্ত ভঙ্গ করে কুরাইশদের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অপরাধে মদিনা থেকে বহিষ্কৃত হয় ।
 
জয় পরাজয়ের অভিজ্ঞতা ও উহুদ রাণাঙ্গনে প্রাথমিকভাবে মুসলিমদের বিজয় এবং সে কারণে উল্লাস ও বিশৃঙ্খলাই। পরবর্তীতে পরাজয়ে পর্যবসিত হয়। অপরদিকে কুরাইশরা আপাত জয়লাভ করলেও এর কোনাে সুফল ভােগ করতে পারেনি ; বরং নৈতিক দুর্বলতাহেতু মনােবল হারিয়ে ময়দান ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। মুসলিমদের বীরত্ব বৃদ্ধি ও উহুদের পরাজয় মুসলিমদের বীরত্ব অধিকতর বৃদ্ধি করেছিল ।

হুদায়বিয়ার সন্ধির গুরুত্ব:

হুদায়বিয়ার সন্ধির তাৎপর্য আলােচনা করলে প্রতীয়মান হবে এতে বিধর্মী ও মুসলিমদের মধ্যে অন্ততপক্ষে দশ বছরের জন্য নিরবচ্ছিন্ন শান্তি রক্ষার প্রচেষ্টা করা হয়। যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে কুরাইশ ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সদিচ্ছা প্রকাশ পায় । কারণ কুরাইশরাও যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। এ সন্ধির ফলে তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। ব্যবসায় বাণিজ্যে অবাধ গতিবিধির নিশ্চয়তা লাভ করে কুরাইশরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে এর মহানুভবতা ও দূরদর্শিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়। এতে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

মক্কা বিজয় ও শান্তি নীতি: রাসূলুল্লাহ (সা.) মক্কা অভিযানের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। অষ্টম হিজরী সনের ১৮ রমযান রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রায় দশ হাজার অনুরক্ত ভক্ত সাথে নিয়ে মক্কা অভিমুখে যাত্রা করেন। মুসলিম বাহিনী যথাসময়ে মক্কার নিকটবর্তী মাররুয যাহরান উপত্যকায় উপস্থিত হয়ে শিবির স্থাপন করে । আরবদের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সা.) সেনাবাহিনীকে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালাবার নির্দেশ দেন , তাতে সমগ্র মরুভূমি ঝলমল করে ওঠে। কুরাইশ প্রধানগণ এ দৃশ্য দেখে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহের জন্য হাকিম বিন হিযাম, আবু সুফিয়ান ও বুদায়লকে পাঠায়। তবু প্রহরারত মুসলিম সৈন্যরা আবু সুফিয়ানকে ধরে ফেললেন। তাকে বন্দি করা হয়। পরে আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহণ করেন।তারপর মহানবী ( সা . ) আবু সুফিয়ানকে বললেন- আবু সুফিয়ান, তুমি গিয়ে মক্কাবাসীদের অভয় দাও আজ তাদের প্রতি কোনােই কঠোরতা করা। হবে না । তুমি আমার পক্ষে নগরময় ঘােষণা করে দাও

১. যারা আত্মসমর্পণ করবে ,
২. যারা কাবায় প্রবেশ করবে ।
৩. যারা নিজেদের গৃহদ্বার বন্ধ করে রাখবে । অথবা
৪. যারা আবু সুফিয়ানের গৃহে প্রবেশ করবে , তাদের অভয় দেয়া হলাে ।

মক্কায় পৌছে রাসূলুল্লাহ হনুজ নামক স্থানে ঝাণ্ডা উড্ডীন করতে এবং সৈন্যদের নিয়ে হযরত খালিদ ( রা ) -কে উচ্চভূমির দিকে অগ্রসর হওয়ার আদেশ করেন। মহানবী (সা.) মুসলিম বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, যতক্ষণ কেউ তােমাদের সাথে লড়াই না করবে , তােমরাও লড়াই করবে না। কুরাইশদের থেকে ইকরামা ও সাফওয়ান তীর নিক্ষেপ আরম্ভ করে ।এতে কুরয ইবনে জাবির ফিহরী ও কুনায়স ইবনে খালিদ ইবনে রবিয়া শহীদ হন। হযরত খালিদ প্রতিশােধ গ্রহণ আরম্ভ করলে যুদ্ধ বেঁধে যায়। এতে ৭০ জন কাফিরকে হত্যা করে ফেলেন।

বায়তুল্লায় প্রবেশ ও সালাত আদায়:

রাসুলুল্লাহ (সা.) আনসার ও মুহাজিরদের নিয়ে মসজিদে হারাম বায়তুল্লায় প্রবেশ করলেন। ভক্তিভরে তার চারপার্শ্বে তাওয়াফ করলেন ও হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করলেন। হযরত উমর ও আলী ( রা:) কে বায়তুল্লাহ হতে ৩৬০ টি মূর্তি অপসারণ করে কাবাঘর পবিত্র করতে আদেশ দিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) কাবাঘরে প্রবেশ করে দু’রাকাত সালাত আদায় করলেন ও তাকবিরের ধনিতে বায়তুল্লাহ মুখরিত হল। অতঃপর তিনি কাবাঘরের দরজা খুললেন | এইভাবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয় করলেন এবং শান্তি নীতি স্থাপন করলেন মক্কাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *