SSC 2021 Accounting Assignment Answer 5th Week
SSC 2021 Accounting Assignment Answer 5th Week
এসএসসি ২০২১ হিসাববিজ্ঞান এসাইনমেন্ট সমাধান
শিরোনাম: দুতরফা ও একতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ
(ক) দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির সুবিধাসমূহ:
দুতরফা দাখিলা হিসাব পদ্ধতি হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ, নির্ভরযোগ্য, বিজ্ঞানসম্মত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি পদ্ধতি। এ হিসাব পদ্ধতির বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। দুতরফা দাখিলা হিসাব পদ্ধতির সুবিধার কারণে বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হিসাব সখ্রক্ষণের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। এর সুবিধাগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো। 1111
১। পরিপূর্ণ হিসাব সংরক্ষণ : প্রতিটি লেনদেনকে ডেবিট ও ক্রেডিট বিশ্লেষণ করে সমপরিমাণ টাকায় লিপিবদ্ধ করা হয় বলে যেকোন লেনদেনের পূর্ণাঙ্গ হিসাব জানা যায়।
২। লাভ লোকসান নিরুপণ : এ পদ্ধতিতে ব্যবসায়ের মুনাফা জাতীয় আয়-ব্যয়ের পরিপূর্ণ ও সঠিক হিসাব সংরক্ষণ করা হয় বলে নির্দিষ্ট সময় পরে বিশদ আয় বিবরণী তৈরির মাধ্যমে ব্যবসায়ের নিট মুনাফা বা নিট লোকসান নির্ণয় করা যায়।
৩। গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই : প্রতিটি লেনদেনের ডেবিট পক্ষের বিপরীতে সমপরিমাণ অঙ্কের ক্রেডিট দাখিলা লিপিবদ্ধ করতে হয়। ফলে কোনো নির্দিষ্ট তারিখে রেওয়ামিল প্রস্তুত করে হিসাবের গাণিতিক নির্ভুলতা যাচাই করা যায়।
৪। আর্থিক অবস্থা নিরুপণ : একটি নির্দিষ্ট তারিখে আর্থিক অবস্থার বিবরণী তৈরির মাধ্যমে কারবারের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
৫। ভুল-ত্রুটি ও জালিয়াতি উদ্ঘাটন ও প্রতিরোধ : এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করলে খুব সহজেই ভুল ত্রুটি ও জালিয়াতি চিহ্নিত করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা যায়।
৬। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ : এ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত ব্যয় সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৭। মোট দেনা-পাওনার পরিমাণ নির্ণয়: এ পদ্ধতিতে হিসাব রাখার ফলে ব্যবসায়ের মালিক যেকোন সময় তার মোট পাওনা ও দেনার পরিমাণ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
৮। সঠিক কর নির্ধারণ : এ পদ্ধতিতে সঠিক হিসাব রাখার ফলে এর ভিত্তিতে নির্ণীত বিভিন্ন কর যথা আয়কর, ভ্যাট, আমদানি শুল্ক ও রপ্তানি শুল্ক ইত্যাদি কর কর্তৃপক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়।
(খ) লেনদেনের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয় :
সহায়ক তথ্য-১ এর আলোকে সাবিনা এন্টারপ্রাইজের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয় করা হলো:
(গ) হিসাব চক্রের ধাপ গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
১. লেনদেন সনাক্তকরণ ও পরিমাপকরণ: হিসাব চক্রের প্রথম ধাপে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত ঘটনাগুলো থেকে লেনদেন সনাক্তকরণ ও অর্থের মাপ কাঠিতে পরিমাপ করতে হয়। যে ঘটনা অনার্থিক এবং টাকার অংকে পরিমাপ করা যায় না তা হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা যায় না।
২. লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ: হিসাব চক্রের দ্বিতীয় ধাপে হিসাবের বইতে লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়। লেনদেন সংঘটিত হওয়ার পর প্রতিটি লেনদেনের দ্বৈতসত্তা বশ্লিষেণ করে এক পক্ষকে ডেবিট ও অন্য পক্ষকে ক্রেডিট করে ।প্রাথমিক পর্যায়ে তারিখ অনুযায়ী হিসাবের বই জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। জাবেদায় লেনদেন লিপিবদ্ধ করাকে জাবেদাভুক্তকরণ বলা হয়।
৩. শ্রেণীবদ্ধকরণ: লেনদেনগুলোকে জাবেদাভুক্তকরণের পর সমজাতীয় লেনদেনগুলো শ্রেণীবিন্যাস করে পৃথক পৃথক শিরোণামে লিপিবদ্ধ করা হয়। এ কার্যক্রমকে খতিয়ানভুক্তকরণ বলা হয়। যে হিসাবের বইতে লেনদেনসমূহ শ্রেণীবদ্ধভাবে ও সংক্ষিপ্তাকারে পাকাপাকিভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করার কাজকে খতিয়ানভুক্তকরণ বলা হয়।
৪. সংক্ষিপ্তকরণ: খতিয়ানস্থিত হিসাবসমূহের ডেবিট ও ক্রেডিট উদ্বৃত্তসম‚হ নিয়ে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এই তালিকাকে রেওয়ামিল বলে। রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয় হিসাবসম‚হের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই ও আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতে তথ্য সরবরাহ করার জন্য। রেওয়ামিলের দুইপার্শ্ব সর্বদাই সমান হয়।
৫. সমন্বয় ও সমাপনি দাখিলা: রেওয়ামিল প্রস্তুতের পর বকেয়া ও অগ্রিম আয়-ব্যয় সমন্বয় করে হিসাব কালের সঠিক আয়-ব্যয় নির্ণয় করা হয়। হিসাবের কোথাও ভুল-ত্রুটি থাকলে সংশোধন করতে হয়। এরূপ সমন্বয় ও সংশোধন, সমন্বয় ও সংশোধনী দাখিলার মাধ্যমে করা হয়। তাছাড়া, মুনাফা জাতীয় আয় ও ব্যয় হিসাবগুলোর উদ্বৃত্ত আর্থিক বিবরণীতে স্থানান্তর করে মুনাফাজাতীয় হিসাবসমূহ বন্ধ করতে হয়। মুনাফা জাতীয় হিসাব বন্ধের জন্য যে দাখিলা দেয়া হয় তাকে সমাপনী দাখিলা বলে।
৬. আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণ: রেওয়ামিল ও সমন্বয় তথ্য নিয়ে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। সাধারণত হিসাবকাল শেষে আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা জানার জন্য আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। আর্থিক বিবরণীসমূহের মধ্যে উৎপাদন ব্যয় বিবরণী, আয় বিবরণী ও উদ্বৃতপত্র প্রধান।
৭. বিবরণী বশ্লিষেণ ও ব্যাখাদান: ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে স্বার্থ সংশ্লষ্টি বিভিন্ন পক্ষ যেমন মালিক, ব্যবস্থাপনা, পাওনাদার, দেনাদার, কর্মচারী, সরকার, কর কর্তৃপক্ষ, জনসাধারণ, গবেষক প্রমুখ বিভির্ন্ন তথ্যের প্রয়োজন অনুভব করে। আর্থিক বিবরণী ও এর ব্যাখ্যা বশ্লিষেণ থেকে তথ্য বিবরণ ও প্রতিবেদনের আকারে ঐ পক্ষগুলোকে সরবরাহ করে।
৮. প্রারম্ভিক জাবেদা লিখন: হিসাবকাল শেষে সম্পত্তি ও দায় হিসাবসমূহের উদ্বৃত্ত একটি প্রারম্ভিক জাবেদার মাধ্যমে পরবর্তী বৎসরের হিসাব বইয়ে স্থানান্তর করা হয়। এভাবেই বিগত ও চলতি বৎসরের হিসাবের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপিত হয় এবং এভাবে হিসাবরক্ষণ চক্রাকারে আবর্তিত হয়।
(ঘ) একতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে লাভ-ক্ষতি নির্ণয়
সহায়ক তথ্য – ২ ব্যবহার করে একতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে লাভ-ক্ষতি নির্ণয়:
প্রাম্ভিক মূলধন = প্রাম্ভিক মোট সম্পদ – প্রাম্ভিক মোট দায়
= 5,30,000 – 2,90,000
= 2,40,000 টাকা
সমাপনী মূলধন নির্ণয়:
লাভ/ ক্ষতি= {(সমাপনী মূলধন+ উত্তোলন)-( প্রাম্ভিক মূলধন+ অতিরিক্ত মূলধন)}
={(2,90,000+65,000)-( 2,40,000 + 80,000)}
=3,55,000-3,20,000
=35,000 টাকা
অতএব লাভ 35,000 টাকা।
সমাপ্ত