SSC 2021 Business Entrepreneurship Assignment Answer 5th Week
SSC 2021 Business Entrepreneurship Assignment Answer 5th Week
শিরোনাম: বাংলাদেশের বেকারত্ব নিরসনে আত্মকর্মসংস্থানের ভূমিকা নিরুপণ
“ক” নং প্রশ্ন: আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা।
উত্তর: সাধারণ অর্থে নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিজেই করাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে। আত্মকর্মসংস্থান এর মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের পাশাপাশি অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে অধিক চাহিদাকৃত চাকরির উপর চাপ কম পড়ে এবং বেকারত্ব হ্রাস পায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বিভিন্ন খুচরা বিক্রয়, রেডিও ও টেলিভিশন মেরামত ইত্যাদি।
“খ’ নং প্রশ্ন: আত্মকর্মসংস্থানের উপযুক্ত ও লাভজনক ক্ষেত্র তালিকায় উপস্থাপন।
উত্তর: খ) আত্মকর্মসংস্থান এর উপযুক্ত ও লাভজনক ক্ষেত্র
চাহিদা আছে এমন পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করে বা সেবাদান করে অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে। সবসময় খেয়াল রাখতে হবে আমাদের যে সকল সম্পদ রয়েছে তার সঠিক ব্যবহার করে কিভাবে সম্মানজনকভাবে জীবিকা উপার্জন করা যায়। স্বল্প মূলধন নিয়ে নিজস্ব মেধা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই আত্বকর্মসংস্থানে সফল হওয়া যায়। এ সব বিষয় বিশ্লেষণ করে আমরা আত্মকর্মসংস্থানের বেশ কিছু উপযুক্ত ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে পারি। নিল্সের ছকে তার কিছু উদাহরণ দেওয়া হল:
আত্মকর্মসংস্থানের উপযুক্ত ও লাভজনক ক্ষেত্রসমূহের নাম ধারাবাহিকভাবে তালিকায় উপস্থাপন করা হলো:
গ) আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধকরণের করণীয়:
যেহেতু দেশে চাকরির সুযোগ সীমিত এবং ইচ্ছা করলেই সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে এত অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। তাই এর বিকল্প হচ্ছে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করা। কিন্তু এ দেশের যুবসমাজের নিকট আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা স্বচ্ছ ও যথেষ্ট নয়। অন্যদিকে দীর্ঘদিনের সামাজিক মূল্যবোধ ও পুঁথিগত পড়াশুনার কারণে যুবসমাজ জীবিকা বলতে চাকরিকে বুঝে থাকে। ফলে শিক্ষিত -অশিক্ষিত নির্বিশেষে বেকারের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমান যুব ও তরুণসমাজ ও আগামী প্রজন্মকে আত্মকর্মসংস্থানে উদুদ্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। নিম্নে সেগুলি উল্লেখ করা হলো:
১. শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে হবে এ বলে,যেকোনো পেশা বা কাজই ছোট ও অপমানের নয়।
২. স্ব স্ব এলাকার আত্মকর্মসংস্থানের উপযুক্ত, ক্ষেত্রগুলোর তালিকা প্রণয়ন করে বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালে প্রচারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
৩. স্ব স্ব এলাকার আত্মকর্মসংস্থানের, মাধ্যমে যারা স্বাবলম্বী ও সফল হয়েছে তাদেরকে বিদ্যালয়ে এনে শিক্ষার্থীদেরকে তাদের জীবনকাহিনী শোনাতে হবে।
৪. বিদ্যালয় বা কলেজ থেকে।যে সকল শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে কিংবা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসার সুযোগ পায়না তাদেরকে বিভিন্ন উপযুক্ত ক্ষেত্র প্রশিক্ষণ ও ঝণদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. নবম ও দশম, শ্রেণির শিক্ষাক্রমে বৃত্তিমূলক, কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষাকে পর্যাপ্তভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৬. আত্মকর্মসংস্থানকে সামনে রেখে যুব উন্নয়ন ব্যাংক ও শিক্ষা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে সহজ শর্তে ঋণদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্পসুদে ঋণদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘ) আত্মকর্মসংস্থান এর গুরুত্ব:
আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে ব্যক্তির নিজের যেমন কর্মসংস্থান হয়, তেমনি অনেক নতুন কর্মসংস্থানের ও সুযোগ সৃষ্টি হয়। সীমিত চাকুরির বাজারে সকলের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয় না। যারা স্বাধীনভাবে কিছু করতে চায় তারা নিজস্ব মেধা ও দক্ষতা কাজে লাগাতে এগিয়ে আসেন এবং আত্মকর্মসংস্থান করে স্বাবলম্বী হন। তাই আত্মকর্মসংস্থানের গুরুত্ব দেশের অর্থনীতিতে অপরিসীম। নিম্নে সংক্ষেপে তা আলোচিত হলো:
১ কর্মসংস্থানকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়- মজুরি বা বেতনভিত্তিক চাকুরি, আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায়। যারা স্বাধীনভাবে কাজ করে জীবিকা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি উত্তম পন্থা।
২. কর্মসংস্থানের প্রধান উৎস সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে শ্রমজীবী ও চাকরীজীবী লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কর্মসংস্থানের চাহিদা যে হারে বৃদ্ধি পায় সে হারে কর্মসংস্থানের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় না। এক্ষেত্রে আত্মকর্মসংস্থানের কোন বিকল্প নাই।
৩. আত্মকর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় মূলধন হলো নিজের দক্ষতা। কর্ম সম্পাদনের জন্য যে যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল প্রয়োজন তাঁর অর্থসংস্থান করাও অনেকটা সহজ।
৪. বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানের আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।
৫. আত্মকর্মসংস্থান একটি স্বাধীন পেশা। আর এ ব্যবসায় যেহেতু অনেক সময় নিজের বাড়িতে বা জমিতে করা যায় সেহেতু আলাদা খরচ হয় না।
৬. অন্যান্য পেশায় আয়ের সম্ভাবনা সীমিত। কিন্ত আত্মকর্মসংস্থান থেকে প্রাপ্ত আয় প্রথমদিকে সীমিত ও অনিশ্চিত হলেও পরবর্তীতে এ পেশা থেকে আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা।
৭. বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় এখানে মজুরি অনেক কম। আবার আমাদের দেশে মৌসুমী বেকারত্বের সমস্যাও প্রকট। এসকল সমস্যা সমাধানে আত্মকর্মসংস্থান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
৮.আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে শহরমুখী জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ ও গ্রামীণসমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।
৯. আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বয়স কোনো সমস্যা নয়। এর মাধ্যমে যে কোনো বয়সের মানুষ তার দক্ষতা অনুযায়ী অর্থ উপার্জন করতে পারে।
১০.আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত থাকলে তরুণ সমাজ নানা সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত না থেকে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
সমাপ্ত, আশাকরি ভালো লেগেছে। পরবর্তী আপডেট পেতে সঙ্গে থেকো ।